আন্তর্জাতিক

ইন্দোনেশিয়ায় তেলের ডিপোতে আগুন, নিহত ১৭

ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জাকার্তায় জ্বালানি তেলের ডিপোয় ভয়াবহ আগুনে শিশুসহ অন্তত ১৭ জন নিহত হয়েছে। অগ্নিদ্বগ্ধ অবস্থায় কপক্ষে ৫০ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এর মধ্যে গুরুতর আহত ১২ জন বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

বিবিএস আন্তজার্তিক ডেস্ক: জানা গেছে, প্রায় ৮-১০ ঘণ্টা ধরে আগুন জ্বলে। দমকলের ৫২টি ইঞ্জিন মিলে অবশেষে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়। আগুন অনেকটা ছড়িয়ে পড়ায় আশেপাশের এলাকা খালি করা হয়েছে। কয়েক হাজার মানুষকে অন্যত্র স্থানান্তর করা হয়েছে।

স্থানীয় প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার (৩ মার্চ) রাতে ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জাকার্তার উত্তরে তানাহ মেরাহ এলাকায় ‘প্লামপাং’ জ্বালানি স্টেশনে আগুন লাগে। এটি ইন্দোনেশিয়ার অন্যতম বড় তেলের ডিপো। রাষ্ট্রীয় জ্বালানি সংস্থা পের্তামিনা ডিপোটি পরিচালনা করত। এই তেলের ডিপো থেকেই ইন্দোনেশিয়ার মোট জ্বালানির চাহিদার ২৫ শতাংশ সরবরাহ করা হয়।

জানা গেছে, আগুন লাগার সঙ্গে-সঙ্গে দমকলে খবর দেয়া হয়। তবে দাহ্য পদার্থে পরিপূর্ণ থাকায় তেলের ডিপোয় ভয়াবহ বিস্ফোরণ হয় ও আগুন আরও ছড়িয়ে পড়ে। আশেপাশের অঞ্চলের বেশ কিছু বাড়িও আগুনে পুড়ে গেছে।

প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, ৫২টি দমকলের ইঞ্জিন ও কমপক্ষে ২৬০ জন দমকলকর্মী মিলে কয়েক ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়েছে।

সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট হওয়া বিভিন্ন ভিডিওতে দেখা গিয়েছে, তেলের ডিপো থেকে আগুনের লেলিহান শিখা ও গলগল করে কালো ধোঁয়া বের হচ্ছে। একদিকে যেখানে দমকলকর্মীরা আগুন নেভাতে হিমশিম খাচ্ছেন, সেখানেই কয়েকশো মানুষ প্রাণ বাঁচাতে ছোটাছুটি করছেন।

প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, ভারী বৃষ্টি বা বজ্রপাতের কারণে তেল সরবরাহের কোনও পাইপলাইন ফেটে গিয়েছিল। সেখান থেকেই আগুন লেগে যায় তেলের ডিপোয়। দাহ্য পদার্থ হওয়ায় নিমেষেই আগুন ছড়িয়ে পড়ে। অগ্নিদ্বগ্ধ অবস্থায় কপক্ষে ৫০ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।

প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে,আশেপাশের অঞ্চল থেকে প্রায় ৬০০ জন বাসিন্দাকে নিরাপদ জায়গায় স্থানান্তরিত করা হয়েছে।

তেল ও গ্যাস ফার্মের প্রধান নির্বাহী নিক বিদ্যাবতী বলেছেন, তাঁরা অভ্যন্তরীণভাবে অগ্নিকাণ্ডের কারণ অনুসন্ধান করবেন। ভবিষ্যতে যাতে এ ধরনের দুর্ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটে, সে ব্যাপারেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ অগ্নিকাণ্ডের কারণে দেশের কোথাও জ্বালানি সরবরাহ ব্যাহত হয়নি বলেও জানিয়েছেন তিনি। নিক বিদ্যাবতী বলেছেন, পার্শ্ববর্তী তেলের টার্মিনাল থেকে নিরাপদে তেলের ব্যাকআপ সরবরাহ করা হয়েছে।

ইন্দোনেশিয়ার রাষ্ট্রীয় কোম্পানিবিষয়ক মন্ত্রী এরিক থোহির আহত ও নিহতদের পরিবারে প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়েছেন। একই সঙ্গে তিনি এ দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধান করতে পের্তামিনাকে নির্দেশ দিয়েছেন।

উল্লেখ্য, এর আগে ২০০৯ সালে একই ডিপোতে আগুন লেগেছিল। তবে সে সময় কেউ হতাহত হননি। এ ছাড়া ২০১৪ সালে ওই ডিপোর আশপাশে ৪০টি বাড়িতে আগুন লেগেছিল। সেবারও কেউ হতাহত হয়নি।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button