চট্টগ্রাম

কক্সবাজারে প্রাক্তন রাখাইন ছাত্রীদের দুই দিনব্যাপী কঠিন চীবর দানোৎসব শুরু

এম.এ আজিজ রাসেল :
পর্যটন নগরী কক্সবাজারে শুরু হয়েছে দুই দিনব্যাপী দানোত্তম শুভ কঠিন চীবর দানোৎসব। শুক্রবার (২৮ অক্টোবর) বিকালে শহরের কেন্দ্রীয় মাহাসিংদোগ্রী বৌদ্ধ বিহারে প্রদীপ প্রজ্জ্বলন, মঙ্গল জল ছিটানো, ধর্মীয় এবং জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও শান্তির প্রতীক পায়রা উড়িয়ে পবিত্র এই দানোৎসবের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন ধর্মীয় গুরুগণ। এরপর পাঠ করা হয় মঙ্গলসূত্র। রাত ৮টায় ধর্মদেশনার পর অনুষ্ঠিত মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।

দানোৎসবের সমাপনী দিনে শনিবার (২৯ অক্টোবর) সকাল ৭টায় বের করা হবে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা। এরপর পূজনীয় ভিক্ষু—সংঘের পিন্ডচারণ (ছোঁয়েং সংগ্রহ), ভিক্ষু সংঘকে পিন্ডদান, পূর্ণার্থীদের আপ্যায়ন, বিকালে দানোত্তম কঠিন চীবর দানানুষ্ঠান, সদ্ধর্ম দেশনা ও উৎসর্গের মধ্য দিয়ে দুই দিনব্যাপী মহৎ এই আয়োজন শেষ হবে।

দ্বিতীয় বারের মতো কঠিন চীবর দানোৎসবের আয়োজন করে কক্সবাজার সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা। আয়োজককারী এ ছেন নু, খিন ছিন, সেরি, বুবু, নিবু, উ হ্লা য়িন, মায়েনু, মোসে, এ সান, খিন এ ওয়ান ও আবু জানান, বৌদ্ধ ভিক্ষুদের টানা তিন মাস বর্ষাবাসের পর প্রবারণা পূর্ণিমা পালনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় মাসোব্যাপী কঠিন চীবরদান উৎসব। এসময় দায়ক—দায়িকারা বৌদ্ধ বিহারে ভিক্ষুদের উদ্দেশ্যে সংঘ দান, অষ্ট পরিস্কার, বুদ্ধ মূর্তি, কল্পতরু, হাজার প্রদীপসহ নানাবিধ দান করে। এছাড়া চন্দন ও ডাবের পানি দিয়ে বুদ্ধমূর্তিকে স্নান করানো হয়। এটি বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের সবচেয়ে পবিত্র অনুষ্ঠান।

বৌদ্ধ ধর্মীয় গুরুদের মতে, ভিক্ষুদের পরিধেয় চীবরের (কাপড়) অভাব মোচন এবং বৌদ্ধ নর—নারীদের মধ্যে দানের চেতনা বাড়ানোর জন্য ভগবান বুদ্ধ কঠিন চীবর দান প্রবর্তন করেন। এ দানের প্রভাবে ধন সম্পদ লাভ করা যায়। পর্যায়ক্রমে জেলার অর্ধশতাধিক বৌদ্ধ বিহারে কঠিন চীবর দানোৎসব চলবে। এ উৎসবকে ঘিরে জেলার বৌদ্ধ পল্লীগুলোতে বিরাজ করছে উৎসবের আমেজ ।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button