চাঁপাইনবাবগঞ্জে বিভিন্ন দুর্গা মন্দির পরিদর্শন করেন সোনামসজিদ স্থল বন্দর প্রেসক্লাবের সভাপতি অপু


বিশেষ প্রতিনিধিঃ
ক্ষনে ক্ষনে উলুধ্বনি, শঙ্খ, কাঁসর আর ঢাকের বাদ্য ও মহা সপ্তমীর মধ্যদিয়ে শুরু হয়ে গেছে বাঙ্গালি সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব শারদীয়া দুর্গাপূজা।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, প্রতি বছরের ন্যায়
চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় এ বছর মোট ১৪৫টি মন্দিরে দুর্গাপূজার আয়োজন করা হয়েছে। এর মধ্যে সদর উপজেলায় ৬০টি, নাচোলে ১২টি, গোমস্তাপুরে ২৯ টি শিবগঞ্জে ৪১টি ও ভোলাহাট উপজেলায় ৩টি।
জেলার প্রতিটি সার্বজনীন দুর্গা মন্দিরে মহা সপ্তমীর মধ্যদিয়ে দুর্গা পূজার মূল আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়েছে।
রোববার (২ অক্টোবর) সপ্তমী পূজার মাধ্যমে দুর্গা পূজার মূল আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। পূজা শেষ হবে বুধবার (৫ অক্টোবর) বিজয়া দশমীতে। পুজোর দিনগুলোতে করোনা থেকে মুক্তির জন্য ও দেশের কল্যানে বিশেষ প্রার্থনা করা হবে। এই ৫ দিনে পূজার সময় দেবী দুর্গার ভোগপ্রসাদ বিতরণ এবং বিজয়ার শোভাযাত্রা করা হবে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার পাঁচটি উপজেলার সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মাঝে বইছে উৎসবের আমেজ। পুজা মন্ডপ গুলোতেও নেওয়া হয়েছে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা, দায়িত্ব পালন করছে থানা প্রশাসন ও আনসার ভিডিপির সদস্যগণ।
শনিবার (১- নভেম্বর) সন্ধ্যা বেলায় দেবী দুর্গার আমন্ত্রণ ও অধিবাসের মাধ্যমে অকালবোধন অনুষ্ঠিত হয়েছে, এবার মা এসেছেন গজে করে আর চলে যাবেন নৌকায় চড়ে। ঢাক-ঢোল আর কাঁসার বাদ্যে শুরু হয়েছে দুর্গাপূজার মূল আনুষ্ঠানিকতা। সপ্তমী তিথীতে নবপত্রিকা স্নান ও সিদ্ধিদাতা গণেশের পাশে কলাবউ স্থাপন করা হয়েছে। এইদিনেই প্রাণ সঞ্চার করা হবে দেবীর মৃন্ময়ীতে।
আজ সোমবার (৩ অক্টোবর) মহা অষ্টমী তিথিতে সনাতনী নারী-পুরুষ, শিশু-কিশোর-বৃদ্ধ সকলে মিলে দেবীকে পুষ্পাঞ্জলি দেয়। এইদিনই হবে সন্ধীপূজা মাতৃরূপে কুমারী কন্যাকে জীবন্ত প্রতিমা কল্পনা করে জগজ্জননীর উদ্দেশে শ্রদ্ধা নিবেদন করে হবে কুমারী পূজা।
শাস্ত্রমতে এদিন পূজিত কুমারী কন্যার নামকরণ করা হয় দেবীর ৬ষ্ঠ রূপ ‘উমা। ভক্তদের মতে এটি একাধারে ঈশ্বরের উপাসনা মানববন্দনা আর নারীর মর্যাদা প্রতিষ্ঠা। মূলত নারীর সম্মান, মানুষের সম্মান আর ঈশ্বর আরাধনাই কুমারী পূজার অন্তর্নিহিত শিক্ষা। মঙ্গলবার (৪ অক্টোবর) নবমীতে মণ্ডপে মণ্ডপে দেবীর মহা প্রসাদ বিতরণ করা হবে। এবং বুধবার (৫ অক্টোবর) দশমী তিথিতে দর্পণ বিসর্জনের মধ্য দিয়ে বিদায় জানানো হবে দেবী দুর্গাকে।
আর দেবীর এই আগমনকে ঘিরেই ব্যস্ত সময় পার করছেন সদর উপজেলার বারঘরিয়া ইউনিয়নের ঐতিহ্যেবাহী বাইসপুতুল সার্বজনীন দুর্গা মন্দির। এর সভাপতি শ্রী প্রনব কুমার পাল ও সাধারণ সম্পাদক, শ্রী মৃনাল কান্তি পাল সহ, বাইসপুতুল সার্বজনীন দুর্গা মন্দির এর সকল পূজা সংশ্লিষ্টরা।
জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি শ্রী ডাবলু কুমার ঘোষ জানান, এবার চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার ৫টি উপজেলায় ১৪৫টি মন্ডপে দুর্গাপূজা হচ্ছে। অধিকাংশ মন্ডপে বসানো হয়েছে সিসি ক্যামেরা ও কঠোর নিরাপত্তা। করোনার কারণে গত দুই বছর সীমিত পরিসরে উৎসব হলেও এবারের প্রস্তুতি বেশ জাঁকজমকপূর্ণ, জেলার প্রতিটি সার্বজনীন দুর্গা মন্দির বলেও জানান তিনি।
সদর উপজেলার রামচন্দ্রপুরহাট মন্দির কমিটির সভাপতি শ্রী দিলিপ কর্মকার ও সাধারণ সম্পাদক শ্রী নিতাই চন্দ্র সিংহ বলেন, গত দুই বছর করোনার কারণে দুর্গাপূজার আনন্দ ভালোভাবে উপভোগ করা যায়নি। এবার প্রকোপ কম থাকায় সুন্দর পরিবেশে পূজা উদযাপন করা হচ্ছে।
আজ সোমবার (২ অক্টোবর) আনন্দঘন ও উৎসব মূখর পরিবেশে বিভিন্ন পূজা মন্দির পরিদর্শন করেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী সোনামসজিদ স্থল বন্দর প্রেসক্লাব এর সভাপতি ও এশিয়ান টিভির স্টাফ রিপোর্টার ফয়সাল আজম অপু, তিনি বিভিন্ন মন্দিরে গিয়ে সার্বিক বিষয় নিয়ে খোঁজ খবর নেন এবং কুশল বিনিময় করেন।
সোনামসজিদ স্থল বন্দর প্রেসক্লাব এর সভাপতি ফয়সাল আজম অপু, বিভিন্ন পূজা মন্ডব ঘুরে প্রশাসন ও স্বেচ্চাসেবকদের সমন্বয়ে শান্তিপূর্ণ পূজা উদযাপন হচ্ছে বলে তিনি সন্তোষ প্রকাশ করেন। জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের নিরাপত্তা তৎপরতা ছিলো চোখে পড়ার মতো বলে উল্লেখ করেন তিনি।