চট্টগ্রাম

লামা শহরে এক জবর দখলকারীর আগ্রাসনে নিরীহ মামুনের ত্রাহিত্রাহি অবস্থা

এক জবর দখলকারীর আগ্রাসনে নিরীহ মামুনের ত্রাহিত্রাহি অবস্থা

জাহিদ হাসান,বান্দরবান প্রতিনিধি।।

লামায় ভূমির কাগজ জালিয়াত জবর দখলের শিকার মানুষের কষ্ট লাগবে কোনো মহলের আন্তরিকতা নেই। সংশ্লিষ্টদের অব্যবস্থাপনায় একই ভূমি একাধিকবার বিক্রি হচ্ছে।

ফলশ্রুতিতে আইন শৃঙ্খলার উন্নতি হচ্ছে না। ঠক প্রতারকদের উপঢৌকনের লোভ রুদ্ধ করে দিচ্ছে বিচার প্রার্থী, অধিকার হারা প্রজার পথ। এমন অহরহ ঘটনার নজীর রয়েছে পার্বত্য লামা উপজেলায়। এর একটি জাজ্বল্যমান উদাহারণ হতে পারে লামা পৌরসভার ৩ নং ওয়ার্ডস্থ টাউন হলের পেছনে বসবাসকারী জনৈক মোঃ মামুন হোসেনের নামে রেকর্ডীয় জমি জবর দখল করে রাখার ঘটনাটি।

ঘটনার বিবরণে প্রকাশ, উপজেলার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের বাসিন্দা খায়রুল বসর, পিতা এমদাদ মিয়ার মালিকানাধীন ২৯৩ নং ছাগল খাইয়া মৌজার ২ নং খতিয়ানের আন্দর ৩৮৮ নং দাগের অংশ থেকে চার শতক ১ম শ্রেণির জমি পাঁচ লাখ টাকা মূল্যে ক্রয় করেন স্থানীয় বাসিন্দা মোঃ মামুন হোসেন, পিতা- জয়নাল আবেদীন।

যার বায়নানামা দলিল নং-৮১৯/২০২০,তাং ২৩/১২/২০২০।এর পর নানান তালবাহানা করে চুক্তির শর্ত ভঙ্গ করে বিক্রেতা আবুল বসর ক্রেতা মোঃ মামুন হোসেন থেকে বিভিন্ন দফে আরো ৯ লাখ টাকা আদায় করেন। বিক্রিত ভূমিতে আবুল বসর এর একটি সমিল চলমান ছিলো। মামুনের সাথে কথা ছিলো সমিল ভাড়াটিয়ার চুক্তির মেয়াদ শেষ হলে সাব কবলা প্রদানসহ জায়গাটি তাকে বুজিয়ে দেয়া হবে। এমন শর্তে আবুল বসর (সাবেক চেয়ারম্যান)কে চুক্তির বাহিরে আরো ৫ লাখ টাকা দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়।

সে অনুযায়ী উপজেলার একজন শীর্ষস্থানীয় ব্যক্তির কাছে মামুন ৫ লাখ টাকা জমা রাখেন।ক্রেতার অনুকুলে জমির ছাফ কবলা ও দখল বুজে পাওয়ার পর ক্রেতার উপস্থিতিতে বিক্রেতা আমানতকারীর নিকট থেকে জমা ৫ লাখ টাকা বুজে নিবেন বলে শর্ত ছিলো। কিন্তু ছাফ কবলার দিন আবুল বসর সু-কৌশলে মামুনের মাধ্যমে জমাকৃত টাকা নিজের কাছে নিয়ে নেন। এর পর
বিগত ১/১১/২০২১ তারিখে ছাফ কবলা দলিল ৪২৭/২১ সম্পাদন হয়ে বিক্রেতার নামীয় খতিয়ান থেকে বিক্রিত অংশ চার শতক কর্তন পূর্বক ক্রেতা মোঃ মামুন হোসেন এর নামে তৌজি রেকর্ডভূক্ত হয় ও ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধ করে আসছে মামুন।

এদিকে বিক্রিত জমিতে সমিল ভাড়াটিয়া আলাউদ্দিন দখলে থেকে যায়।

মামুন জানায়,
এ বিষয়ে জমি ছাফ কবলার দিন বিক্রয় মুল্য সম্পূর্ণরূপে পরিশোধ করার পর বিক্রিত জমির উপর স্থিত ক্রেতার সমিল ভাড়াটিয়া আলা উদ্দিনকে স’মিলসহ অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে ক্রেতা মামুনকে জমির দখল বুঝিয়ে দেয়া হবে বলে কথা ছিলো। সে সময় আলা উদ্দিনও মামুনের কাছে ব্যবসার সুবিধার্থে কিছুদিন সময় চেয়ে নেয় এবং সরতে দেরি হলে মামুনের অনুকুলে ভাড়া প্রদান করবে। মামুনের দাবি, কথানুযায়ী মামুনকে জায়গার বাবদ কয়েক মাস ভাড়াও প্রদান করেছিলো আলা উদ্দিন। কিন্তু আলা উদ্দিন স’মিল সরিয়ে নেন নাই। এর পর আলা উদ্দীন মামুনের ক্রয়কৃত জায়গাটি পূর্বতম মালিক খায়রুল বসর থেকে ক্রয় করেছেন বলে দাবি করে।

মামুন আরো জানান, তাৎক্ষনিক চট্টগ্রামে চিকিৎসারত বিক্রেতা খায়রুল বসরকে আমি মুঠোফোনে আলা উদ্দিনের দাবির কথাটি জানাইলে, তিনি এমন দাবী সম্পূর্ণরূপে মিথ্যা বলে উড়িয়ে দেয়। খায়রুল বসর আরো জানায়, চিকিৎসা শেষে বাড়িতে এসে বিষয়টি সমাধান করে দিব।এর কিছু দিনের মধ্যে বিক্রেতা মৃত্যুবরণ করে। এর পর মামুন হোসেন আলা উদ্দিন এর প্রতারণা ও জবর দখল বিষয়ে লামা কোর্টে মামলা করেনও কোনো সুরাহা পায় নাই।

মামুন জানায়, বর্তমানে জবর দখলকারী আলা উদ্দীন, তাকে উল্টো মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে দেয়ার হুমকি দিচ্ছে। এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানাযায়, এই আলা উদ্দিন ফার্নিচার ব্যবসার সুবাধে প্রশাসনের কর্তা ব্যক্তিসহ অনেকের সাথে রয়েছে তার দহরমমহরম। ইতোপূর্বে সে এধরণের বিশ্বাস ভঙ্গ করে আরো অনেককে ঠকিয়ে এসেছে। তবে আলা উদ্দিন মামুনের দাবি প্রত্যাখ্যান করে জানান, সে ওই জায়গার ভাটাটিয়া থাকাকালে আবুল বসর থেকে জমিটি কিনেছেন।

আলা উদ্দিন এও স্বীকার করেন যে, তার দখল অংশে দেড় কিংবা দুই শতক পরিমান মামুনের জমি রয়েছে। স্থানীয়ভাবে বৈঠক করে আমি সেই জমির অংশ ছেড়ে দিব।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button