নাইক্ষ্যংছড়িতে ঝিরি বাঁধের লাভের চেয়ে ক্ষতি বেশি, অনিশ্চিত ৪শত একর বুরো চাষ।
ঝিরি বাঁধের লাভের চেয়ে ক্ষতি বেশি, অনিশ্চিত ৪শত একর বুরো চাষ।


মোহাম্মদ ইউনুছ নাইক্ষ্যংছড়ি,বান্দরবান প্রতিনিধিঃ
পার্বত্য নাইক্ষ্যংছড়িতে ঝিরি বাঁধের লাভের চেয়ে ক্ষতির মুখে পড়তে হচ্ছে সুবিধা ভোগীদের। চলতি মাসের শুরুতে বৃষ্টির পানি ও পাহাড়ি ঢলে তলিয়ে গেছে উপজেলার নিচু এলাকা সহ আগাম ফসল। সরজমিনে ঘুরে দেখা যায়
সবচেয়ে বেশী ক্ষতি হয়েছে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার সোনাইছড়ি,নাইক্ষ্যংছড়ি সদর ও বাইশারি ইউনিয়নের বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি) ঝিরি বাঁধ গুলো। উপজেলার পুরো এলাকা জুড়ে বুরো চাষের পানি সংরক্ষন এর মাধ্যম হিসাবে কাজ করে আসছে বিএডিসি’র ঝিরি বাঁধ গুলো।
বিএডিসি অফিস সূত্রে
জানা গেছে, নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলাতে দুই পাহাড়ের ঝিরিতে মাটির বাঁধ তৈর করে পানি সংরক্ষণ করে বুরো চাষাবাদের জন্য ব্যাবস্থা করে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি) রাঙ্গামাটি জোন।
বিগত ২০০৬ সালে তিন পাহাড়ি প্রকল্পের মাধ্যমে,বান্দরবান জেলায় ক্ষুদ্র সেচ বিভাগের আওতায় প্রকল্প গ্রহন করে নাইক্ষ্যংছড়িতে।
এবং দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজ ও শেষ হয় ১১সালে । পরবর্তিতে ঝিরি বাঁধের ব্যাপক চাহিদা ও কৃষকের আবেদনের প্রেক্ষিতে কর্মসূচির মাধ্যমে বিভিন্ন সময় নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার নাইক্ষ্যংছড়ি সদর ইউনিয়নে ৭ টি,সোনাইছড়িতে ৭ টি, বাইশারিতে ২টি সহ মোট ১৬ টি ঝিরিতে বাঁধ নির্মাণ করে বিএডিসি। পরবর্তীতে এসব মাটির বাঁধে কোন ধরনের মেরামত করতে পারেনি সংস্থাটি। এই বাঁধ গুলো মাটি দিয়ে তৈরি কাঠের বল্লী ড্রামশীট দিয়ে পেলাসািড়িং ও পাকা ড্রেইন দিয়ে চলে অতিরিক্ত পানি নিস্কসনের কাজ,যা পরিকল্পনাকারী বা নির্মাণকারী (টিকাদারের) অবহেলায় নিঃস্ব হচ্ছে অনেক পরিবার। এমনটা দেখা গেছে নাইক্ষ্যংছড়ি সদরের চেরার কোলে একটি বাধ।
এই বাঁধে ঢুভে গেছে নিরীহ কৃষেকের প্রায় দশ একর চাষাবাদের জমি। কৃষক মোঃ হাসেম জানান, আমাদের সুবিধার্তে করা এই বাঁধ আমার সর্বনাশ ডেকে এনেছে। আমার প্রায় দুই শতাধিক সেগুনগাছ সহ ৪ একর চাষি জমি এ বাঁধের পানিতে তলিয়ে গেছে। টিকাদারের অনিয়ম কাজে পানির গতি কমাতে হাউজটি প্রথম বৃষ্টিতে ভেঙ্গে গেছে। তাই পানির গতিতে এখন আমার একমাত্র মাতাগুজার ঠাঁই ঘরটি বাঙ্গন রক্ষায় সংশ্লিষ্টদের হস্তক্ষেপ কামনা করেন। বৃদ্ধ সাহেব মিয়া কান্না জড়িত কন্ঠে এই প্রতিবেদক কে জানান তার একমাত্র সম্বল ১১ হাজার একটি পানের বরজ বাধের পানিতে তলিয়ে গেছে। তার মত হাজী মোঃ আলী, ছৈয়দ আলম, চুরা খাতুন, আবুল কাসেম, মোঃ হোসেন, হাসিনা বেগম সহ অনেকে জানান, এসব বাধে বর্ষার শেষ দিকে বুরো চাষাবাদের জন্য গেইট আটকিয়ে পানি সংরক্ষণ করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
সংস্কার নাহলে উপজেলার ১৬টি বাধে ৩৫০-৪০০ একর জমিতে আগামী বুরো চাষাবাদে ক্ষতির আশঙ্কা দেখা দিতে পারে বলে মনে করছেন সচেতন মহল। তাই সাধারণ কৃষকের দাবি বিএডিসির ঝিরি বাঁধ গুলো কর্তৃপক্ষ দ্রুত মেরামতের ব্যাবস্তা নিবে। সোনাইছড়ি ডাংখাই ঝিরি বাঁধের ব্যবস্হাপনা কমিটির সভাপতি মংবাচা মার্মা জানান, বাঁধের পানিতে ২৭ একর জমিতে চাষবাদ হয় আমার বাঁধটি এখন ঝুঁকিপূর্ণ মাটি সরে গেছে অতিরিক্তখ পানি ধরে রাখা সম্ভব হচ্ছেনা যার ফলে আমাদের চাষাবাদ অনিশ্চিত। সোনাইছড়ি ইউনিয়নের চেয়ারম্যন এ্যানি মার্মা বলেন, বিএডিসির বাঁধের পানিতে আমার ইউনিয়নের আধিকাংশ জমিতে বুরো চাষ করে কৃষকরা। বন্যায় প্রায় বাঁধে ক্ষতি হয়েছে। তাই আগামী বুরো মৌসুমের পূর্বে বিএডিসির ঝিরি বাঁধ গুলো মেরামত করা প্রয়োজন। এ বিষয়ে পার্বত্য জেলা পরিষদ সদস্য ক্যানো ওয়ান চাক জানান, চেরারকুল খালের বাধে মোঃ হাসেমের বাড়িটি ঝুঁকিতে রয়েছে। এটি জরুরি প্রকল্পের মাধ্যমে গাইড ওয়াল দেওয়া হবে। বান্দরবানের বিএডিসির সহকারি প্রকৌশলী আবু নাঈম সাংবাদিক দের বলেন, বান্দরবানের বন্যায় আমাদেন অনেক গুলো ঝিরি বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে যা আগামী বুরো চাষে সেচে প্রভাব পড়বে।
উক্ত খাতে আমাদের কোন বাজেট বরাদ্দ ও প্রকল্প না থাকায় এখনো আমরা কোন ব্যাবস্থা নিতে পারিনি, তবে আমরা ক্ষতির পরিমাণ সরজমিন পরিদর্শণ করে উর্ধতন কর্তৃপক্ষ কে অবগত করার চেষ্টা করছি।