চট্টগ্রাম

দখলবাজ চক্রের কবলে মুক্তিযোদ্ধা গৌরাঙ্গ শর্মা

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
মাস্টার গৌরঙ্গ শর্মা। ১৯৭১ সালে দেশমাতৃকার টানে ঝাপিয়ে পড়েছিলেন যুদ্ধের ময়দানে। জীবনের মায়া ভুলে অস্ত্র হাতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে করেছেন একের পর দুঃসাহসিক অভিযান।

শুধু মুক্তিযুদ্ধ করে থেমে থাকেননি তিনি। স্বাধীনতার পর শিক্ষকতা করে দেশ গড়ার কাজে নিজেকে সঁপে দেন এই মহান বীর মুক্তিযোদ্ধা। কিন্তু যে দেশের জন্য তিনি যুদ্ধ করেছেন, সেই দেশেই উদ্বাস্তু হওয়ার পথে তিনি।

তাঁর বসতভিটার প্রতি লুলোপ দৃষ্টি পড়েছে দখলবাজ চক্রের। কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার পাগলির বিল রাস্তার মুখে তাঁর বসতভিটা দখলে পাঁয়তারা করছে আমিনুল হক আমিন নামে এক মেম্বার।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উত্তর বড় বিল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক বীর মুক্তিযোদ্ধা ডাক্তার গৌরাঙ্গ শর্মার ভিটে বাড়ি ঘেষে একটি দ্বিতল ভবন নির্মাণ করছে আমিন মেম্বার। ভবন নির্মাণে মানা হয়নি বিল্ডিং কোড। ভবনের দেওয়াল ও সানশেড দেওয়া হয়েছে গৌরাঙ্গ শর্মার বাড়ির সীমানা পেরিয়ে। বিষয়টি আমিন মেম্বারকে বলেও কোন কিছু কর্ণপাত করছে না। এতে নিরূপায় হয়ে তিনি আদালতের স্বরণাপন্ন হন। তাঁর আবেদনের প্রেক্ষিতে স্থাপনা নির্মাণ বন্ধে ১৪৪ ধারা জারি করে আদালত। তবে আদালত ও পুলিশের আদেশ না মেনে ভবন নির্মাণ কাজ অব্যাহত রেখেছে মেম্বার আমিন।

স্থানীয়রা বলছেন, দীর্ঘ ৩৫ বছর ধরে মুক্তিযোদ্ধা গৌরাঙ্গ শর্মা পরিবার নিয়ে এখানে বসবাস করছে। কিন্তু আজ তিনি দখলবাজ চক্রের কবলে পড়ে অস্তিত্ব বিলীনের পথে।

বীর মুক্তিযোদ্ধা গৌরাঙ্গ শর্মা বলেন, যে দেশের জন্য জীবন বাজি রেখে যুদ্ধ করেছিলাম। আজ সে দেশে নিজ ভিটায় বসবাস করেও আমি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। দখলবাজ চক্রের কর্মকাণ্ডে আমার পরিবার নিয়ে চরম শঙ্কায় রয়েছি। এই চক্র যেকোন সময় আমার পরিবারের ক্ষতি করতে পারে। তাই আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সুদৃষ্টি কামনা করছি।

তবে আনীত অভিযোগের বিষয়ে আমিনুল হক আমিন বলেন, গৌরাঙ্গ শর্মার কোন কাগজ নেই। বিচার শালীসও তিনি মানেন না। তাঁর যে দোকানের কথা বলা হচ্ছে সেটার মালিকানা দুজনেরই। আর তাঁর বসতভিটা দখল চেষ্টার প্রশ্নই আসে না।

এ বিষয়ে উখিয়া থানার ওসি শেখ মোহাম্মদ আলী বলেন, আদালতের নোটিশ পাওয়া গেছে। পুলিশ গিয়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button