নাইক্ষ্যংছড়ি ও গর্জনিয়ায় অসংখ্য গবাদিপশু রোগে আক্রান্ত, ঔষুধ ও চিকিৎসক সংকট


মোহাম্মদ ইউনুছ নাইক্ষ্যংছড়ি,২৯ ইং
নাইক্ষ্যংছড়ি সহ রামু উপজেলার গর্জনিয়া-কচ্ছপিয়া এলাকার প্রতিটি গ্রামে অসংখ্য গবাদিপশু রোগে আক্রান্ত,দেশহারা খামারী ও গরু,ছাগল ও মহিষ পালনকারী ব্যক্তিরা । একারণে নাইক্ষ্যংছড়ি ও রামু পশু হাসপাতাল ও গর্জনিয়াসহ বিভিন্ন হাট বাজারে ঔষুধ সংকট দেখা দিয়েছে। এর পাশাপাশি এসব এলাকায় চিকিৎসকেরও সংকট বলে জানিয়েছেন স্থানীয় লোকজন। একারণে বর্তমানে এসব এলাকার খামারি ও গরু,ছাগল, মহিষ পালনকারীরা বেকায়দায় আছেন। খোঁজ নিয়ে জানা যায় কৃষক ফকির মোহাম্মদ,জয়নাল আবেদীন এর ৭/৮ টা গরুর শরীরে হঠাৎ দেখতে পান গুটি গুটি কিছু একটা বের হয়েছে এবং লোম পড়ে যাচ্ছে।
গরুর শরীরের তাপমাত্রাও বেশি। কিছু খেতেও চাচ্ছে না। নাইক্ষ্যংছড়ি ও গর্জনিয়া বাজারের পশু ডাক্তারের মাধ্যমে বেশ কিছু দিন চিকিৎসা করার পরেও কমছে না। উল্টো গরুর শরীরের বিভিন্ন স্থানে পচন ধরেছে।এবিষয়ে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা পশু হাসপাতালের চিকিৎসক জসিম উদ্দিন এর সাথে যোগাযোগ করে জানা যায় এই রোগের নাম ‘লাম্পি স্কিন’। রোগটি নাইক্ষ্যংছড়ি ও গর্জনিয়া-কচ্ছপিয়া এলাকার প্রতিটি গ্রামের ঘরে ঘরে হাজার হাজার গরু আক্রান্ত হয়েছে। অনেকে এ রোগ শনাক্ত করতে দেরি হওয়ায় এখন গরু বাঁচিয়ে রাখাই অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
গর্জনিয়া বাজারের চিকিৎসক আব্দুল জব্বার ও আবুল মনছুর জানান নাইক্ষ্যংছড়ি ও রামু উপজেলার গর্জনিয়া-কচ্ছপিয়ায় আনুমানিক ১০ হাজার গরু ‘লাম্পি স্কিন’ নামক এই রোগে আক্রান্ত। বিভিন্ন এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এ বছর থেকে এই রোগে গরু আক্রান্ত হচ্ছে। এর আগে এই রোগ কৃষকের বা খামারিদের চোখে পড়েনি।
লাম্পি স্কিন নামক রোগে আক্রান্ত হয়ে বিভিন্ন এলাকায় কয়েকটি গরু মারা যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
খামারি আমান উল্লাহ জানান গত বছর থেকে এই রোগ এলেও গত প্রায় ৩-৪ মাস ধরে রামু উপজেলার ২টি ইউনিয়ন ও নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার বাইশারীসহ ৫ টি ইউনিয়নে এ রোগ ছড়িয়েছে ব্যাপকভাবে। নাইক্ষ্যংছড়ি প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায় এখন পর্যন্ত প্রায় আক্রান্ত হয়েছে ১০ হাজারের মত গরু। কচ্ছপিয়ার খামারি আব্দুর রশিদ ও জাফর আলম জানান, এখানে অভিজ্ঞতা সম্পন্ন কোন পশু ডাক্তার নেই, আমরা পশু চিকিৎসক সংকটে আছি। পাশ্ববর্তী নাইক্ষ্যংছড়ি প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর থেকে ডাক্তার জসিম উদ্দিন নামের একজন চিকিৎসক আসেন সে আমাদের গরু ও মহিষের চিকিৎসা সেবা দেন।
কৃষক ফকির আহাম্মদ জানান বর্তমানে ঔষধ পত্রের দাম বেসামাল আবার অনেক ঔষুধ এ বাজারে পাওয়া যা মুশকিল। অপরদিক নাইক্ষ্যংছড়ি পশু হাসপাতালে সব সময় ঔষুধ সংকট লেগে থাকে। কোন খামারি ও গরু পালনকারী গেলে ঔষধ ছাড়া ফিরে আসতে হয়।
গবাদিপশু পালনকারীদের মতে সরকার যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় আমরা ঔষুধ ও চিকিৎসক সংকটে আছি। দ্রুত এ সংকট নিরসনের জন্য সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।