প্রেমে ব্যর্থ হয়ে শিকলবন্দী মেধাবী ছাত্র সাফায়েত জামিল
ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং চতুর্থ সেমিস্টারের শিক্ষার্থী সাফায়েত জামিল। ভালোবাসায় মোড়ে ভিখারি করেছে তোমারে করেছে রানী। প্রেমের ব্যর্থতায় ভারসাম্যহীন হয়ে সাফাতের পায়ে এখস শিকল।


সফিক খান, বাকেরগঞ্জ, বরিশাল: স্বাভাবিক থাকা অবস্থায় সিফাত ভালোবেসে ছিলেন ইউনিভার্সিটি এক মেয়েকে। সাফাতের সেই প্রেমের সম্পর্ক বেশিদিন টিকেন। অন্য একজনের সাথে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে ওই মেয়েটি। প্রেমিকার এমন আচরণ সাফায়েত কোনভাবেই মেনে নিতে পারেননি। এরপর থেকেই মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে সে। ভুলে থাকার সহজ কোনো সমাধান খুঁজেও পাইনি সাফায়েত। পারিপার্শ্বিক নানা চাপে মানসিক ভারসাম্য হারাতে থাকেন।
৬ মার্চ বাকেরগঞ্জ পৌরসভার ৮ নং ওয়ার্ডের প্রধান সড়কে হাতে পায়ে শিকল বাধা রাস্তায় হাটতে দেখা যায় সাফায়েত নামের ব্যার্থ প্রেমিককে। বরিশালের পটুয়াখালী জেলার কমলাপুর ইউনিয়নের উত্তর ধরান্দি গ্রামের শাহ আলম মুন্সির পুত্র সাফায়েত জামিল। প্রায় ৪ মাস আগে পরিবারের পক্ষ থেকে ঢাকাতে চিকিৎসা করিয়ে সাফায়েতকে গ্রামের বাড়িতে আনা হয়। ওই চিকিৎসা ব্যবস্থায় সাফায়েতের শারীরিক অবস্থার তেমন কোন উন্নতি না হলে সাফায়েতের বাবা শাহ আলম মুন্সি তার ছেলেকে চিকিৎসা করাতে বাকেরগঞ্জের জিনের বাদশা নামে পরিচিত হায়দার ফকিরের বাড়িতে নিয়ে আসেন।
ভন্ড হায়দার ফকিরের দুই মাসের অপো চিকিৎসা ও পাশাপাশি শারীরিক নির্যাতনও চলে তার উপর। পুরোপুরিভাবে হারিয়ে ফেলেন মানসিক ভারসাম্য। তারপর থেকেই শিকলে বাঁধা পড়ে মেধাবী সাফায়েত জামিলের জীবন।
গত ৫ মার্চ রাতে বাকেরগঞ্জ পৌর এলাকার ৮ নং ওয়ার্ডে হায়দার ফকিরের বাড়ি গিয়ে দেখা যায়, ঘরের বারান্দায় শিকল পায়ে মাটিতে রক্তাক্ত অবস্থায় হাত পায়ে শিকল বাঁধা বসে আছেন সাফায়েত। শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাতের চিহ্ন, একটা কাপড় দিয়ে মাথা প্যচানো কপাল দিয়ে রক্ত ঝরছে। শিকল পরা অবস্থায় ঘরের বাহিরে সাফায়েতের গোসল ও পয়ঃনিস্কাশনের জন্য একটা টয়লেট তৈরি করে দেয়া হয়েছে।
বারান্দার একটা রুমে খাটের সাথেই তালা মেরে রাখা হয় সাফায়েতকে। চিকিৎসার নামে দুই মাস ধরে অপো চিকিৎসা শিকার হয়েছেন সাফায়েত।
হায়দার ফকিরের অপ চিকিৎসার শিকার সাফায়েত এই খবর পেয়ে বাকেরগঞ্জ থানা পুলিশ তাকে উদ্ধার করে। সাফায়েতের পরিবারের পক্ষ থেকে ভন্ড হায়দার ফকিরের বিরুদ্ধে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়েছে। সাফায়েতকে সঠিক চিকিৎসা দেওয়ার জন্য তার পরিবারের কাছে তুলে দিয়েছেন থানা পুলিশ।