চট্টগ্রাম

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আগুন: তদন্তে কমিটি

কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার বালুখালী রোহিঙ্গা শিবিরে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের কারণ খতিয়ে দেখতে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে জেলা প্রশাসন। শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মোহাম্মদ মিজানুর রহমান সোমবার জানান, সাত সদস্যের এই কমিটিকে তিন কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। উখিয়া উপজেলার পালংখালী ইউনিয়নের বালুখালী আশ্রয় শিবিরে রোববার দুপুরে আগুন লাগে। ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের ১১টি ইউনিট তিন ঘণ্টার চেষ্টায় নিয়ন্ত্রণে আনে।

কক্সবাজার প্রতিনিধি: অগ্নিকাণ্ডে ক্যাম্পের দুই হাজারের বেশি ঘর পুড়ে যায়। তাতে প্রায় ১২ হাজার মানুষ আশ্রয়হীন হয়ে পড়ে।

শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার বলেন, ‘অগ্নিকাণ্ডের প্রকৃত কারণ অনুসন্ধান ছাড়াও কোনো নাশকতা ছিল কিনা, তা খতিয়ে দেখবে তদন্ত কমিটি।’

কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. আবু সুফিয়ানকে প্রধান করে গঠিত এই কমিটিতে প্রত্যাবাসন কমিশন, এপিবিএন, জেলা পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের প্রতিনিধিরা সদস্য হিসেবে আছেন।

আগুনের কারণে প্রায় ১২ হাজার রোহিঙ্গা গৃহহারা হয়েছেন। সবকিছু হারিয়ে এখন খোলা আকাশের নিচে তীব্র রোদে মানবেতর জীবন কাটছে তাদের। রয়েছে খাদ্য এবং পানিসংকট। তবে দ্রুত রোহিঙ্গাদের খাদ্যসংকট নিরসনসহ ঘর নির্মাণ করে দেয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশন।

সোমবার সকালে ক্যাস্পে গিয়ে দেখা গেছে, অগ্নিকাণ্ডের পর ৯, ১০ ও ১১নং ৩টি ক্যাম্প পুরো ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। ধ্বংসস্তূপের ওপর শুধু ইট-পাথরের খুঁটি দাঁড়িয়ে আছে। ক্ষতিগ্রস্ত রোহিঙ্গাদের অনেকেই ছাই সরিয়ে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র খুঁজে দেখছেন। কেউ কেউ ঘরের দখল ধরে রাখতে পুড়ে যাওয়া ঘরের ওপরই বসে আছেন।

রোহিঙ্গা নেতা সৈয়দউল্লাহ দাবি করেছেন, ১১, ৯ ও ১০ নং ক্যাম্পের ৮টি ব্লকের কয়েক হাজার ঘর ইতোমধ্যে পুড়ে গেছে। তিনি বলেন, এই ক্যাম্পগুলোর কমপক্ষে ১২ হাজার মানুষ খোলা আকাশের নিচে আছে। আমাদের যদি একটু ছায়ার ব্যবস্থা করে না দেয় গরমের কারণে অনেক রোহিঙ্গা অসুস্থ হয়ে পরবে। কাল থেকে অনেকে “ভাতের দানাও” চোখে দেখেনি।

অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তায় এগিয়ে এসেছে আন্তর্জাতিক সংস্থাসহ সরকারি-বেসরকারি অনেক সংস্থা। তারাও চেষ্টা করছে ক্ষতিগ্রস্তদের যথাসাধ্য সহায়তা করতে।

শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (আরআরআরসি) মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, রোববার অগ্নিকাণ্ডে দুই হাজারের বেশি ঘর পুড়ে গেছে। এর মধ্যে শতাধিক দোকান, ২০টির বেশি বেসরকারি সংস্থার হাসপাতাল স্বাস্থ্যকেন্দ্র, রোহিঙ্গা শিশুদের পাঠদানকেন্দ্র, ত্রাণ বিতরণকেন্দ্র, ৩৫টি মসজিদ-মাদরাসা রয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত রোহিঙ্গাদের মধ্যে শুকনো খাবারের পাশাপাশি অতি প্রয়োজনীয় জিনিস সরবরাহ করা হচ্ছে। এদিকে অগ্নিকাণ্ডটি দুর্ঘটনা নাকি নাশকতা তা নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে ধূম্রজাল।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button