লক্ষ্মীপুরে একদিনের নবজাতক হাসপাতালে রেখে পালালেন মা


- মোঃ আরিফ হোসেন
লক্ষ্মীপুর জেলা প্রতিনিধি
লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে এক বাস চালকের স্ত্রী মোম (ছদ্মনাম) এক পুত্র সন্তান জন্ম দিয়েছেন। সেই সন্তানকে হাসপাতালে রেখে পালিয়ে গেছেন তিনি। শিশুটি বর্তমানে হাসপাতালে রয়েছে। নবজাতক এর মুখে খাবার স্যালাইন দিয়ে রাখা হয়েছে।
বুধবার (৫ অক্টোবর) সন্ধায় রায়পুর জনসেবা হাসপাতালে এ ঘটনা ঘটেছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক মোঃ রোমান, শিশুর বাবা, নানি ও দাদি। এঘটনার বিচার চেয়ে ও স্ত্রীর খোঁজে রাত ১০টায় থানায় লিখিত অভিযোগ করেন নবজাতক শিশুর বাবা সুমন।।
শিশুর বাবা মোঃ সুমন বলেন, সোমবার সকালে তার স্ত্রী মোম গর্ভবতী অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি হয়। এরপর সে মঙ্গলবার সন্ধায় একটি ছেলে সন্তানের জন্ম দেন। বুধবার সন্ধায় সে বাচ্চা রেখে পালিয়ে যায়। বাচ্চাটি সুস্থ হাসপাতলে আছে।
মোম এর স্বামী জানান, গত ২ বছর আগে চরপাতা গ্রামের আবদুর রশিদ মাস্টার বাড়ির মৃত শামসুল হকের মেয়ে মোমকে পারিবারিকভাবে বিয়ে করি। দেড় বছর ধরে আমি ঢাকা শহরে যাত্রীবাহি পরিবহন চালাই । বিয়ের পর থেকে সামান্য তুচ্ছ ঘটনায় বিবাদ করতো। এ সময় আমার স্ত্রী বিভিন্ন মানুষের সঙ্গে পরকীয়া সম্পর্ক করে। অবৈধ পরকীয়া সম্পর্কের জেরে আমার স্ত্রী মারধর করতো। একাধিকবার পারিবারিক ও সামাজিকভাবে বৈঠক করেও তাকে সঠিক পথে ও সংসার করতে পারিনি। থানায়ও আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করে নানানভাবে হয়রানি করে। অবশেষে সন্তানের কথা চিন্তা করে ঢাকায় নিয় একসঙ্গে ভাড়া বাসায় বসবাস করি।
গত কয়েকদিন আগে তাকে নিয়ে বাড়িতে আসি। মোম এর শারিরিক অবস্থা ভালো না থাকায় চিকিৎসাও করাই। এখন বাচা জন্ম দিয়ে মোঃ হাসান নামের তার প্রেমিক ফেনী শহরের এক ছেলের সাথে চলে গেছে। তার দাদি ও ফুফুর কারনে আমার সংসার তছনছ করে দিয়েছে। মর্মান্তিক এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে অপরাধীদের শাস্তির দাবি জানাই।
এ বিষয়ে মোম এর মোবাইলে জানান, আমার স্বামী আমাকে দ্বিতীয় বিয়ে করে। বিয়ের পর থেকে স্বামী ও শাশুরীর দ্বারা মানুষিক ও শারিরীক নির্যাতনের কারনে ওই বাচ্চা হাসপাতালে রেখে অজ্ঞাত স্থানে চলে আসছি। এদের উপর প্রতিশোধ নিতেই এই কাজ করেছি। ওই ছেলের সাথে ১ বছর আগেই সম্পর্ক শেষ। আমি কারো সাথে যাই নাই। এদের মা ও ছেলের বিচার করলে বাচ্চার কাছে যাবো।
তার মা জাহানারা বেগম বলেন, আমার মেয়ে খুবই খারাফ। তাকে শাসন করতে পারিনি। তার বাবা মারা যাওয়ার পর দাদি ও ফুফুর কাছে থাকতো।।
এ বিষয়ে রায়পুর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শিপন বড়ুয়া বলেন, নবজাতক শিশুটি তার নানি, দাদি, ফুফু ও বাবার কাছে হাসপাতালে রয়েছে। এ বিষয়ে খোঁজ-খবর নেয়া হচ্ছে। শিশুদের যাতে তার মায়ের কাছে ফিরে যেতে পারে আমরা সে ব্যবস্থা করছি।