জেলার খবর

লক্ষ্মীপুরে চররমনী শিশুকে সিগারেটের আগুনে নির্যাতন

এমরান হোসেন লক্ষ্মীপুর জেলা প্রতিনিধিঃ

লক্ষ্মীপুরে মিথ্যা অপবাধে জাকির হোসেন নামে এক শিশুকে চেয়ারের সাথে বেধে প্লাস দিয়ে চামরা টেনে সিগারেটের আগুনে ক্ষত-বিক্ষত করে বর্বর নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে।
বিষয়টি ধামাচাপা দিতে ঘটনার ৪দিনেও চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে আসতে দেয়নি অভিযুক্তরা।
এঘটনায় শিশুর বাবা আলমগীর হোসেন বাদী হয়ে ৬ জনকে আসামী করে লক্ষ্মীপুর সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আমলী (সদর) আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। আদালতের বিচারক তারেক আজিজ মামলাটি আমলে নিয়ে আগামী ৩০ দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার জন্য লক্ষ্মীপুর সদর মডলে থানার অফিসার ইনচার্জকে নির্দেশ দেন।
আজ বৃহস্পতিবার ২৭ অক্টোবর বিকেলে বিষয়টি নিশ্চিত করেন বাদী পক্ষের আইনজীবীএড. মঞ্জুর আহমেদ তিতু।
তিনি বলেন, এঘটনায় ২৬ অক্টোবর বুধবার আদালতে মামলা হয়েছে। শিশুটিকে মধ্যযুগিয় কায়দায় নির্যাতন চালানো হয়। আলামত মুছে পেলতে হাসপাতালে ভর্তি না করে ৪দিন বাড়িতে আটকে রাখে আসামীরা।

আসামীরা হলেন, সদর উপজেলার চররমনী ইউনিয়নের চর রমনী গ্রামের মৃত আবদুর রশিদের ছেলে গোরফান ও তার ছেলে দেলোয়ার হোসেন, বাদশা মিয়ার ছেলে মনির হোসেন, আবুল কালাম ফরাজির ছেলে মনির, কালাম ভূঁইয়ার ছেলে মাকছুদ আলম ও মৃত মজিবুল হকের ছেলে শাহ আলম। ভুক্তভোগী শিশু জাকির একই ইউনিয়নের মধ্য চররমনী মোহন গ্রামের বাসিন্দা।
মামলা সূত্রে জানা যায়, শিশু জাকিরের বাবা আলমগীরের সাথে দীর্ঘদিন থেকে আসামীদের পারিবারিক ভাবে বিরোধ রয়েছে। ওই বিরোধের জেরে গত মঙ্গলবার (১৮ অক্টোবর) সকালে পূর্বে পরিকল্পিত ভাবে ডেকে নিয়ে অভিযুক্ত শাহ আলমের ঘরে শিশু জাকিরকে চেয়ারের সাথে হাত-পা বেধে বেধড়ক মারধর করে দেলোয়ার, গোরফান, মনির হোসেন, মনির, মাকছুদ ও শাহ আলম। এসময় অভিযুক্ত দেলোয়ার ও তার বাবা গোরফান শিশু জাকিরের শরীরের বিভিন্ন স্থানে প্লাস দিয়ে টেনে সিগারেটের আগুনে ক্ষত-বিক্ষত করে বর্বর নির্যাতন চালায়। এখানেই খ্যান্ত হয়নি তারা। শিশুটির হাতের আঙুলে শুই দিয়ে রক্তাক্ত জখম করে এবং শ্বারোধ করে হত্যার চেষ্টা চালায়। পরে শিশুটির চোখে মরিচের গুড়া দিয়ে সুর্য্যরে দিকে তাকিয়ে থাকতে বাধ্য করে অভিযুক্তরা।
এক পর্যায়ে স্থানীয়দের সহযোগীতায় ঘটনাস্থল থেকে শিশুটিকে উদ্ধার করলেও চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে আনতে পারেন নি পরিবারের লোকজন। ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে এবং নির্যাতনের আলামত নষ্ট করতে শিশুটিকে চিকিৎসার জন্য বাড়ি থেকে হাসপাতালে আনতেও দেয়নি প্রভাবশালী এ অভিযুক্তরা। পরে ঘটনার ৫দিনের মাথায় শিশুটি গোপনে সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নেয়।
শিশু জাকিরের বাবা আলমগীর হোসেন জানান, নির্যাতনের পর চিকিৎসা ছাড়াই ৪ দিন বাড়িতে অরুদ্ধ করে রেখেছে তারা। এখন মামলা করায় আমাদের প্রাণে হত্যার হুমকি দিচ্ছে। এমনকি আমার ছেলের হাতের মোবাইল ফোনটিও নিয়ে গেছে আসামীরা। এঘটনার সুষ্ঠ বিচার দাবী করেন তিনি। এদিকে এ ঘটনায় অভিযুক্তদের মন্তব জানতে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।
এ ব্যাপারে লক্ষ্মীপুর সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোসলেহ উদ্দিন জানান, আদালত থেকে মামলাটি তদন্তের জন্য থানায় দেয়া হয়েছে। বিষয়টি সঠিক তদন্ত শেষে পুনরায় আদালতে প্রতিবেদন দেয়া হবে। এ ব্যাপারে আইনগত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান তিনি।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button