চট্টগ্রাম

লামা পৌর শহরে যত্রতত্র গড়ে উঠেছে ওয়েল্ডিং ওয়ার্কশপ, শব্দ ও বায়ু দূষণ অস্থির জীবন

জাহিদ হাসান,বান্দরবান প্রতিনিধিঃ

লামা পৌর শহরে যত্রতত্র গড়ে উঠেছে ওয়েল্ডিং মেশিন, শব্দ ও বায়ু দূষণ হচ্ছে। ভোগান্তিতে রয়েছে নাগরিকরা। এতদ সংক্রান্ত আইনের প্রয়োগ প্রত্যাশা সকলের। পৌর শহরে প্রবেশ মুখে রয়েছে বেশ কয়েকটি ওয়েল্ডিং ওয়ার্কশপ।
ওয়েল্ডিংয়ের দোকান বা ওয়ার্কশপ নির্মাণকাজের জন্য অত্যাবশ্যকীয়। এসব ওয়ার্কশপে গ্রিল তৈরির জন্য লোহা কাটা, জোড়া দেওয়ার কাজ চলে। তাই বিকট শব্দ, কালো ধুঁয়া ও অদৃশ্য ধাতব কণা উৎপন্ন হয়। ফলে নাগরিকদের দৃষ্টি, শ্রবণ শক্তি হ্রাসসহ নানা ধরণের ক্ষতি হচ্ছে। এসব ওয়ার্কশপ লামা শহরের প্রধান প্রধান গলিগুলোতে স্থান করে নেয়। এগুলো স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকারক হলেও কোনো কর্তৃপক্ষের মনিটরিং নেই। এসব ওয়ার্কশপে শব্দদূষণের পাশাপাশি মারাত্মক বায়ুদূষণ ঘটাচ্ছে। ফলে পথচারী, এলাকাবাসীর পাশাপাশি ওয়েল্ডিং কর্মীরাও রয়েছেন স্বাস্থ্যঝুঁকিতে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অত্যাবশ্যকীয় হলেও এসব ওয়ার্কশপ জনবহুল এলাকার বাইরে নিয়ে যাওয়াই একমাত্র সমাধান।
হাল বাস্তবতায়, শহর অভ্যান্তরে রাস্তায় ধুলো, বালু, যানবাহনের হর্ন, শব্দ ও বায়ুদূষণে অস্থির সবাই। লামা প্রেসক্লাবের সামনে প্রধান সড়ক ঘেঁষে রয়েছে একটি ওয়েল্ডিং ওয়ার্কশপ। এখানে নানা ধরণের ওয়েল্ডিংসহ ইঞ্জিন মেরামত করা হয়। রাতদিন সেখানে বিকট শব্দে প্রেসক্লাবে বসাও এখন কষ্টসাধ্য। প্রায় সময় ইঞ্জিনের কালো ধুঁয়া প্রেসক্লাবসহ আশপাশের হোটেল রেস্তুরা ও আবাসিক ভবনগুলো অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে যায়।
এই ওয়েল্ডিং ওয়ার্কশপ থেকে ১৫ ফুটের মধ্যে রয়েছে লামা প্রেসক্লাব ভবন, কয়েকটি আইনজীবীর চেম্বার, জনতা ব্যাংক ও লাগুয়া রয়েছে একটি রেস্তোরাঁ। এছাড়া ২০০ ফুটের মধ্যে রয়েছে, লামা কোর্ট বিল্ডিং, কোর্ট মসজিদ, উপজেলা কমপ্লেক্স।
ওয়ার্কশপ গুলোতে রাস্তার পাশেই কাটা হচ্ছে রড। সেখান থেকে ছিটকে আসছে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ধাতব কণা। এসব প্রতিষ্ঠান, গলিপথ ও প্রধান সড়ক দখল করে তাদের কর্মকান্ড করছে। ফলে জনসাধারণের চলাচলের মধ্যেই গ্রিল তৈরিসহ বিভিন্ন কাজ করতে থাকায় চরম ভোগান্তিতে রয়েছে নাগরিকরা। লোকজনের চলাচলের তোয়াক্কা না করেই দোকানের কর্মীরা হুটহাট লোহার পাইপ কাটা শুরু করেন। এতে একদিকে যেমন বিকট শব্দ হয়। অন্যদিকে কালো ধুঁয়া ও ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ধাতব কণা ছিটকে যায় মানুষের শরীরে। এসব কণা মিশে যাচ্ছে বাতাসের সঙ্গেও। প্রধান সড়কের পাশে এমন ওয়েল্ডিংয়ের কাজ চলছে হরদমই। লামায় যত্রতত্র গড়ে ওঠা এসব ওয়ার্কশপের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। হোটেল রেস্তোরাঁর মালিক কর্মচারীরা জানান, মেশিনের শব্দ ও কালো ধুঁয়ার কারণে জানালা খোলা যায় না। স্থানীয়রা জানান, গাড়ির হর্নের শব্দ কম থাকলেও দোকানের মেশিনের শব্দ কান জ্বালা পালা করে তোলে। ফুটপাতে কেন কাজ করছেন এর উত্তরে জানাযায়,দোকানে জায়গা কম। সে জন্য দোকানের বাহিরে সড়কের উপর কাজ করা লাগে। এতে কারো কোনো বাঁধা নিষেধ নেই বলেও দাবি করেন তারা। পথচারীরা বলেন, ওয়ার্কশপ রাস্তার মধ্যে বড় বড় লোহার পাইপ নাড়াচাড়া করে। মাঝে মধ্যে অনেক পথচারী ব্যথাও পান। লোহার গুঁড়া শরীরে লাগলে ক্ষতি হয়। অনেক জোরে শব্দ হলে কানে আঙুল দিয়ে রাখতে হয়।
লামায় যেখানে সেখানে যত্রতত্র এসব ওয়ার্কশপ গড়ে উঠছে। আজ পর্যন্ত মনিটরিংয়ের কোনো ব্যবস্থা আমরা দেখিনি। যারা কাজ করে তারাও স্বাস্থ্যঝুঁকির সম্মুখীন হয়। যারা আশপাশে চলাচল করে ক্ষতিগ্রস্ত হয় তারাও।
অভিজ্ঞ মহলের মতে এসবের যেমন দরকার আছে, আবার মনিটরিংয়েরও প্রয়োজন আছে। এজন্য আবাসিক এলাকায় যেসব জায়গায় এই ওয়ার্কশপগুলো গড়ে উঠেছে, সেখান থেকে সরিয়ে অন্যত্র নিতে হবে। তাহলেই শুধু সমাধান হতে পারে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button