আইন-আদালত

হলি আর্টিজানে মামলার ৭ আসামিদের সাজা কমিয়ে আমৃত্যু কারাদণ্ড

রাজধানীর গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে মামলায় সাত আসামীকে বিচারিক আদালতের দেয়া মৃত্যুদণ্ডের সাজা কমিয়ে আমৃত্যু কারাদণ্ড দিয়েছেন হাইকোর্ট।

বিবিএস নিউজ ডেস্ক: মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্তদের ডেথ রেফারেন্স ও আসামীদের আপিল খারিজ করে সোমবার (৩০ অক্টোবর) বিচারপতি সহিদুল করিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এই রায় দেন।

আজকের রায়ে যে সাত আসামীর মৃত্যুদণ্ডের সাজা কমিয়ে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে তারা হলেন: জাহাঙ্গীর হোসেন ওরফে রাজীব গান্ধী, আসলাম হোসেন ওরফে র‌্যাশ, আব্দুস সবুর খান, রাকিবুল হাসান রিগ্যান, হাদিসুর রহমান, শরিফুল ইসলাম ওরফে খালেদ ও মামুনুর রশিদ রিপন।

আদালতে রাষ্ট্র পক্ষে শুনানিতে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বশির আহমেদ। আর আসামী পক্ষে ছিলেন আইনজীবী আরিফুল ইসলাম ও আইনজীবী মো: আমিমুল এহসান জুবায়ের।

এর আগে ১১ অক্টোবর বুধবার শুনানি শেষে রায়ের জন্য ৩০ অক্টোবর দিন রাখা হয়েছিল। চলতি বছরের জানুয়ারিতে মামলাটির শুনানির জন্য কার্যতালিকায় ওঠে।

আসামিপক্ষের আইনজীবী ছিলেন আরিফুল ইসলাম ও আমিমুল এহসান। এর আগে মামলাটি নিষ্পত্তির জন্য এই বেঞ্চ নির্ধারণ করে দেন প্রধান বিচারপতি। সে অনুযায়ী বিষয়টি কার্যতালিকায় আসে।

আদালত তার রায়ে আরো বলেন: ‘ওই হামলার মধ্য দিয়ে জঙ্গিবাদের উন্মত্ততা, নিষ্ঠুরতা ও নৃশংসতার জঘন্য বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে। নিরপরাধ দেশি-বিদেশি মানুষেরা যখন হলি আর্টিজান বেকারিতে রাতের খাবার খেতে যায়; তখনই আকস্মিকভাবে তাদের উপর নেমে আসে জঙ্গিবাদের ভয়াল রূপ। জঙ্গি সন্ত্রাসীরা শিশুদের সামনে এ হত্যাকাণ্ড চালায়। মৃত্যু নিশ্চিত করার জন্য নিথর দেহগুলোকেও তারা ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপায়। মুহূর্তের মধ্যে মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয় হলি আর্টিজান।

এ হত্যাকাণ্ডের ফলে শান্তি ও সম্প্রীতির জন্য পরিচিত বাংলাদেশের ইতিবাচক ভাবমূর্তি কিছুটা ক্ষুণ্ন হয়েছে মন্তব্য করে আদালত বলেন: ‘তাই সাজা প্রদানের ক্ষেত্রে আসামিরা কোনো ধরনের অনুকম্পা বা সহানুভূতি পেতে পারে না। এক্ষেত্রে আসামিদের সর্বোচ্চ সাজা প্রদানই ন্যায় বিচার নিশ্চিত করবে, আর এতে ভাগ্যহত মানুষের স্বজনরা কিছুটা হলেও শান্তি পাবে।’

২০১৬ সালের ১ জুলাই রাতে গুলশানের হলি আর্টিজান রেস্টুরেন্টে হামলা চালিয়ে বিদেশি নাগরিকসহ ২০ জনকে হত্যা করেন নিষিদ্ধঘোষিত জঙ্গি সংগঠন নব্য জেএমবির (আত্মঘাতী) সদস্যরা। তাদের গুলিতে দুই পুলিশ কর্মকর্তা নিহত হন। পরে কমান্ডো অভিযানে নিহত হন পাঁচ জঙ্গি।

এ ঘটনার মামলায় ২০১৯ সালের ২৭ নভেম্বর ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মজিবুর রহমান একজনকে খালাস দিয়ে সাতজনের মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button