বরগুনা প্রতিনিধি: বরগুনার আমতলী উপজেলার ৬ নং আমতলী ইউনিয়নের উত্তর-পশ্চিম টিয়াখালী কালামিয়া সতন্ত্র এবতেদায়ী মাদরাসা (কোড নং ৫৫৪২০) এর প্রধান শিক্ষক মোঃ আঃ মোতালেব এর বিরুদ্ধে ম্যানেজিং কমিটির স্বাক্ষর জালকরাসহ ব্যাপক অনিয়ম-দূর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ পাওয়া গেছে। অনুসন্ধানে জানাযায়, মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক আঃ মোতালেব ১৯৮৭ সালে মাদ্রাসাটি প্রতিষ্ঠার পর থেকে বিভিন্ন অনিয়ম-দূর্নীতি ও ম্যানেজিং কমিটি উপর অশুভ প্রভাব বিস্তারের মাধ্যমে কমিটির স্বাক্ষর জাল করে সম্পূর্ন বিধি বহিঃভূত ভাবে নতুন নতুন শিক্ষক নিয়োগ ও উপর্যুক্ত কোন কারন ছাড়াই নিয়োগ প্রাপ্ত শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বাতিল করে পুনঃরায় শিক্ষক নিয়োগ করা সহ নিয়োগ বানিজ্য করে আসছে। এব্যাপারে উক্ত মাদ্রাসার নিয়োগ প্রাপ্ত শিক্ষিকা বিলকিস বাদী হয়ে আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার সহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযোগকারীর সূত্রে জানাযায়, সহকারী শিক্ষিকা বিলকিস অত্র মাদরাসার জুনিয়র শিক্ষক সাধারন পদে একজন নিয়োগ প্রাপ্ত শিক্ষিকা। মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটির দেয়া নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী বিধি মোতাবেক আবেদন করে তিনি গত ২০/১২/২০১৪ ইং তারিখে অনুষ্ঠিত লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে গত ইং ২৫/১২/২০১৪ তারিখের বাছাই বোর্ডের সিদ্ধান্তক্রমে উত্তর-পশ্চিম টিয়াখালী কালামিয়া স্বতন্ত্র এবতেদায়ী মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির ইং ২৬/১২/২০১৪ তারিখের ২০/১৪ নং স্বারকে জুনিয়র সাধারন শিক্ষিকা পদে নিয়োগ প্রাপ্ত হয়ে অত্র মাদ্রাসায় যোগদান করেন। নিয়োগ প্রাপ্তীর পর থেকে শিক্ষিকা নিয়োমিত ভাবে দ্বায়িত্ব পালন করে আসছেন। উক্ত মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক আঃ মোতালেব শিক্ষিকা বিলকিসের যোগদানের অজুহাতে স্থানীয় তার স্বজনদের উপস্থিতিতে শিক্ষিকা বিলকিসের নিকট থেকে এক কালিন ২০০০০০/= (দুই লক্ষ) টাকা নেন। পরবর্তীতে নভেম্বর ২০১৯ সালের প্রধান শিক্ষক আঃ মোতালেব, সহকারী জুনিয়র শিক্ষিকা বিলকিসকে মৌখিক ভাবে অবহতি দিয়ে সহকারী শিক্ষিকার নিয়োগ বাতিল ঘোষনা করেন। ভূক্তভূগী শিক্ষিকা বিলকিস জানান, প্রধান শিক্ষক আঃ মোতালেব মাদ্রাসা ম্যানেজিং কমিটির স্বাক্ষর জাল করে মোটা অংকের উৎকোচের বিনিময়ে সম্পূর্ন বিধি বহিঃভূত ভাবে আমার কর্ম স্থলে নতুন শিক্ষক নিয়োগ দিয়ে লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে নিয়ে শিক্ষক নিয়োগ সংক্রান্ত কাগজপত্র উপজেলা শিক্ষা অফিসে জমা দিয়েছেন। ভূক্তভূগী সহকারী শিক্ষিকা বিলকিস তার মাদ্রাসা কর্তৃক অবহতি পত্র ও তার দেয়া দুই লক্ষ টাকা দাবী করিলে প্রধান শিক্ষক আঃ মোতালেব বলেন তার প্রতিষ্ঠান থেকে কোন অব্যহতি পত্র দিবেন না ও টাকা ফেরত দিতে অস্বীকৃতি জানায় এবং তিনি তাকে বিভিন্ন ভাবে ভয়ভিতি দেখায় অশালীন কটুক্তি করেন। এ ব্যাপরে জানতে চাইলে মাদ্রাসার সহ-সভাপতি মোঃ সুলতান শিকদার বলেন, প্রধান শিক্ষক তার এলাকার একটি মসজিদের ইমাম সাহেব, অভিযোগ কারীর ঘটনা আমি জানি, আমার সামনে বসে ঐ শিক্ষিকা বিলকিস প্রধান শিক্ষক আঃ মোতালেব সাহেবকে টাকা দিয়েছিলেন । এছাড়া ও শিক্ষিকা বিলকিস এর স্বামী মোঃ রুবেল মাদ্রাসার স্বার্থে তার ভরাট করা নিজ দখলীয় জমি ছেড়ে দিয়েছেন। তিনি আরও বলেন প্রধান শিক্ষক (ইমাম সাহেব হুজুর) বিলকিসের টাকা না দিয়েই এ বছর হজ্বে যাবেন তাতে তার হজ্ব কবুল হউক আর নাই হউক। কমিটির অন্যতম শিক্ষানুরাগী সদস্য আজিজ আকনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, নতুন নিয়োগ সম্পূর্ন বিধি বহিঃভূত কমিটির সদস্য হিসেবে কোন রেজুলেশনে বা কাগজে আমি কোন স্বাক্ষর দেই নাই, আমার স্বাক্ষর প্রধান শিক্ষক জাল করে নিয়োগ দিয়েছে। কমিটির আপর সদস্য মোঃ কুদ্দুস গাজী বলেন, কমিটির ১১ জনের ১০ জন সদস্যই প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে। মাদ্রাসা করার সময় শুরুতে একবার শুধু মিটিং হয়েছে আর কোন মিটিং হয় নাই, আমাদের কমিটির সভাপতি শুধু প্রধান শিক্ষকের পক্ষের বাকি সকলের স্বই-স্বাক্ষর জাল-জালিয়াতি করে প্রধান শিক্ষক নিয়োগ বানিজ্য করছেন, তিনি আরও বলেন আমার বাড়ির সামনে মাদ্রাসা, এতে কোন ছাত্র-ছাত্রী নাই অথচ নামকাওয়াস্তে শিক্ষক নিয়োগ বানিজ্য করে যাচ্ছেন প্রধান শিক্ষক আঃ মোতালেব । ২০১৯ সালের সমাপনী পরীক্ষায় পার্শবর্তী অন্য স্কুল থেকে ফাইভে পাশ করা এক জনকে দিয়ে পরীক্ষা দেওয়াইয়া ছিল। এ ব্যাপারে ব্যপক সমালোচিত হন প্রধান শিক্ষক আঃ মোতালেব । অভিযুক্ত অত্র মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক মোঃ আঃ মোতালেব (০১৭২৮৮৭৩৭১৬) এর নিকট ফোন করে জানতে চাইলে তিনি শুকৌশলে শিক্ষিক নিয়োগ সংক্রান্ত ও অর্থ নেয়ার কথা আংশিক স্বীকার করেন।