আফরোজা বেগম রংপুর
পল্লীবন্ধু এরশাদ! আজ আমাদের মাঝে নেই
তবে রয়ে গেছে তাঁর অসংখ্য মানব প্রেমের কীর্তি। ক্ষমতা থাকাকালীন সময় এর কথা
নাইবা বললাম। ৯০ পরবর্তীতে জেল জীবনের গল্প নাইবা তুললাম কিন্তু তার পরের জীবনে অনেক অজানা গল্প রয়েছে জনকল্যানে তাঁর। পাচঁ দিনব্যাপী বৃহত্তর দক্ষিনাঞ্চলে ঐতিহাসিক লঞ্চ মার্চে হুলার হাঠ লঞ্চ ঘাটে থামানো লঞ্চে সন্ধ্যা বেলায় যখন ঢাকা থেকে যাওয়া মিডিয়া কর্মী সহ পার্টির দপ্তরে নিয়োজিত থাকা নেতারা
গ্রামের বাজারে গিয়েছেন ঢাকায় সংবাদ মাধ্যমে জনসভার সংবাদটি ফ্যাক্স করার জন্য তখন তিনি লঞ্চের তিন তলায় দাঁড়িয়ে, হঠাৎ করেই লঞ্চ ঘাটে ভিড় করে বাবার কোলে দাঁড়িয়ে থাকা এক শিশুর দিকে তাঁর চোখ পড়তেই, সেই শিশু সহ বাবাকে লঞ্চের ভিতরে ডেকে পাঠান তিনি।
শিশু বাচ্চাটি সহ সেই লোকটি দোতালার সিড়ি বেয়ে তিন তলায় উঠার আগেই তাকিয়ে দেখেন অনিন্দ্য এক হাসি মাখা মুখ নিয়ে দুহাত বাড়িয়ে দাঁড়িয়ে আছেন সাবেক রাষ্ট্রপতি পল্লীবন্ধু
এরশাদ। দু’হাতে শিশুটিকে কোলে তুলে নিয়ে
পকেট হাত দিলেন। অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলাম
দৃশ্যটি দেখার জন্য, তিনি পকেট থেকে হাত বের
করতেই দেখলাম অনেক গুলো চকলেট তার
হাতে! অবাক হয়ে আবারও ভাবলাম স্যার কি চকলেট খান! না হলে পকেটে চকলেট থাকবে কেন ? সেই চকলেট গুলো শিশুটির হাতে দিয়ে
কতটা আদর করে তাকেঁ আবার ফিরিয়ে দিলেন পিতার কাছে। পরে জেনে ছিলাম স্যার যখন
বাসা থেকে বের হতেন তখন পকেটে কিংবা গাড়িতে চকলেট রাখতেন। তাঁর চলার গাড়িতে ভিক্ষুক দের জন্য নতুন একশত টাকা ও পঞ্চাশ টাকা নোটের দুটো বান্ডেল নিয়েই পথ চলতে হতো ব্যক্তিগত সহকারী বা ড্রাইভার এর। পথ চলতে রাস্তার জ্যামে দাঁড়ানো তাঁর গাড়ির দিকে এগিয়ে এসে কোন ভিক্ষুক খালি হাতে ফেরত গেছেন বলে আমার জানা নেই । আমাদের জাতীয় তরুণ পার্টি কর্মী মরহুম আজাদ চৌধুরী প্রায় দিনই স্যার কে একটা করে গোলাপ ফুল দিতেন। শত ভিড় উপেক্ষা করে সেই ফুলটি যখন নেতার হাতে পৌঁছাতো তখন কর্মীর ভালবাসার দেওয়া ফুলটি তিনি একবার শুকে গায়ে জড়ানো কোর্টের বুক পকেটে রাখতেন। উত্তরাঞ্চলে যাবার পথে রাস্তার দুপাশে দাঁড়ানো জনতার অভিবাদনে
সাড়া দিতে গিয়েই তাঁর চোখ আটকে যায় এক
অন্ধ মেয়ের দিকে, বাবার সাথে দাঁড়িয়ে মেয়েটি
অভিবাদন জানাচ্ছিল। গাড়ি থামিয়ে, মেয়েটির
দিকে এগিয়ে গিয়ে আদর করলেন। অন্ধত্ব দূর
করার কোন উপায় আছে কিনা জানতে চাইলে,
শুনতে পান আছে। ব্যস ভিজিটিং কার্ড দিয়ে
দেখা করার কথা বলে এগিয়ে চলেন তিনি।
কি ভাবছেন তিনি ভুলে যাবেন ঘটনাটি তাইনা ?
কারন নেতাদের চরিত্র তো এমনই মানুষের
সামনে এক ও পিছনে আরেক। খবর নিয়ে
দেখুন কর্নিয়া জোগাড় করে, অপারেশন করিয়ে
চোখের আলো ফিরিয়ে দিয়ে ছিলেন সেই অন্ধ
মেয়েটির। যে কিনা রাস্তায় দাঁড়িয়ে শুধু তাকে
অভিবাদন জানিয়ে ছিল। তাজরীন গার্মেন্টস
ও রানা প্লাজা দুর্ঘটনায় আহত অনেক গুলো
মেয়ের ভরন পোষন এর দায়িত্ব আমৃত্যু পালন
করেছেন পল্লীবন্ধু এরশাদ। মজার ব্যপার হলো
একটু খোঁজ নিয়ে দেখুন রাষ্ট্রপতি, সেনাপ্রধান,
সংসদ সদস্য হিসাবে পাওয়া বেতন-ভাতার টাকা
গুলো দিয়ে তিনি কি করতেন কিংবা সোনালী
ব্যাংক সংসদ ভবন শাখা থেকে তিনি টাকা উত্তোলন করতেন কিনা ? উত্তর একটাই সেই টাকা তিনি উত্তোলন করতেন না। প্রতিমাসে সেই টাকার সাথে আরও টাকা মিলিয়ে সোনালী ব্যাংকের মাধ্যমেই পাঠিয়ে দেওয়া হতো তাঁর ওয়াদাকৃত গরীব, অসহায়, আগুনে পোড়াঁ, দূর্ঘটনার শিকার সেই সমস্ত মানুষ গুলো সহ দেশের বিভিন্ন ধর্মীয় উপাসনালয় ও দাতব্য প্রতিষ্ঠানে। তিনি নেই কিন্তু তাঁর রেখে যাওয়া কর্মের মধ্যেই যে বেচেঁ আছেন তিনি তা আজ একটু অনুমান করছি তাঁর প্রিয় পুত্র সাদ এরশাদ এমপি’র কিছু কর্মের মধ্য দিয়ে। গত ১৫ মে শুক্রবার বাদ জুম্মা সাদ এরশাদ এমপি রংপুর সদর আসনের এরশাদ নগরে যখন খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করছিলেন সুবিধা বঞ্চিত,অসহায় মানুষ গুলোর মাঝে। তখন তাঁর দেওয়া খাদ্য সামগ্রী নিয়ে হাঠতে পারছিল না ছবিতে থাকা বৃদ্ধা মহিলাটি। দৃশ্যটি চোখে পড়তেই দৌড়ে গিয়ে বৃদ্ধার হাত থেকে খাদ্য সামগ্রীর ব্যাগটি নিজ হাতে নিয়ে বৃদ্ধার বাড়ির দিকে রওনা হোন তিনি। পিছনে থাকা কর্মীদের কোন কথাই তিনি কর্নপাত করেন নি। বৃদ্ধা মহিলা সহ খাদ্যের ব্যাগটি নিয়ে বৃদ্ধার বাড়িতে আসলেন সাদ এরশাদ ঘামে ভেজা শরীর নিয়ে। অসহায় বৃদ্ধ পরিবারটির পরম মমতায় এগিয়ে দেওয়া চেয়ারে বসেই শুনতে
শুরু করেন অসহায় সেই বৃদ্ধ পরিবারের গল্প।
গল্পের শুরুটা হলো তবে এর শেষটা কোথায়
জানতে হয়তো অপেক্ষা করতে হবে আমাদের।
পিতার মানব প্রেমের আদর্শ কি পেড়েছে পুত্র
কে উদ্ভুদ্ধ করতে!? এক কথায় বলতে চাই
পেড়েছে ! তাই আসুন না সবে মাত্র রাজনৈতিক
ময়দানে আসা এরশাদ পুত্রের প্রতি বাড়িয়ে দেই
আমাদের সবার সু-পরামর্শ ও সহোযোগিতার হাত। তাহলেই হয়তো হবে তারুন্যের বাংলাদেশ
বিনির্মান। জয় হোক মানবতার।।
পল্লীবন্ধু এরশাদ অমর হউক
জাতীয় পার্টি জিন্দাবাদ
মোঃ শাহাবুল ইসলাম
এরশাদ আদর্শের সৈনিক