মোঃ রবিউল ইসলাম, চুয়াডাঙ্গা থেকে
চুয়াডাঙ্গা জেলার সুযোগ্য পুলিশ সুপার জনাব মোঃ জাহিদুল ইসলাম এঁর সঠিক দিক নির্দেশনায় জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) ও চুয়াডাঙ্গা সদর থানার চৌকস টিমের সমন্বয়ে রাতভর শ্বাসরুদ্ধকর সফল অভিযানে চুয়াডাঙ্গায় একই পরিবারের চারটি শিশুকে উদ্ধার করে মা-বাবার কাছে ফিরিয়ে দিলেন পুলিশ। চুয়াডাঙ্গা পৌরসভাধীন বুজরুক গড়গড়ি এলাকার খোকনের ছেলে আশিক (২০), রহমত (১০), আশফিয়া(০৩) ও সাগরের ছেলে সোহান (১০) গতকাল ২৫/০৫/২০২০ খ্রিষ্টাব্দ দুপুর আড়াইটার সময় ঈদের আনন্দ করার জন্য এলাকায় বেড়াতে বাহির হয়। উল্লেখ্য যে, এরা চার ভাই বোন। আশিক এদের মধ্যে বড় এবং সে মোবাইল ব্যবহার করে। অতঃপর সন্ধ্যা লাগার পরও তাঁরা বাড়িতে ফেরে নাই। এলাকা এবং সকল আত্মীয় স্বজনের বাড়িতে খোঁজ নিয়েও খোকন ও তার স্ত্রী কোথাও তাদের খুঁজে পাইনি। পাশাপাশি তাদের সাথে দুগ্ধপোষ্য আশফিয়া একটি কন্যা সন্তান আছে। এই পরিবার ঘটনায় সাংঘাতিক দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হয়ে পড়ে। আশিকের মোবাইল বরাবর বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। পরিবারটি আরও হতাশাগ্রস্ত হয়ে একপর্যায়ে থানাতে আসে এবং থানায় একখানা নিখোঁজ জিডি করেন। যাহার জিডি নং ৮০৭। পুলিশ সুপার, চুয়াডাঙ্গা মহোদয় বিষয়টি সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে যে কোনোভাবে রাতেই এই ভিকটিম উদ্ধার নির্দেশ দেন। রাতেই অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) সার্কেল সাহেব এর মাধ্যমে নিখোঁজ ভিকটিম আশিকের মোবাইল এর শেষ অবস্থান নির্ণয় করা হয়। অতঃপর ভিকটিমের পরিবারের সাথে কথাবার্তা বলে আরো বেশকিছু নির্ভরযোগ্য তথ্য প্রমাণ পেলে সংগৃহীত তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে দামুড়হুদা থানাধীন হেমায়েতপুর গ্রাম হইতে আশিকের সম্পর্কিত এক শ্যালক মোঃ রফিকুল ইসলাম, পিতা- বদর উদ্দিন এর বাড়ি থেকে উদ্ধার করা হয়। প্রাথমিকভাবে জানা যায় যে, আজ থেকে ৬ মাস পূর্বে আশিকের দামুড়হুদা থানাধীন লোকনাথপুর গ্রামে বদর উদ্দিন এর মেয়ে বেলি খাতুনের সাথে বিয়ে হয়। কিন্তু বিয়ের পর মেয়েটি আশিকের ঘর করতে রাজি হয় নাই এবং তার সাথে বিবাহ বন্ধন ছেদ করার জন্য দুই পরিবারের মধ্যে সম্পর্কের টানাপোড়েন চলছে। আশিক মূলতঃ তার বিয়ে করা এই স্ত্রীর সাথে পুনরায় সম্পর্ক গড়ে তোলার জন্য তার শ্যালকের সাথে সম্পর্ক গড়ে তোলে। শ্যালকের সাথে সম্পর্ক গড়ে তোলার জন্য মূলতঃ ভাই-বোনসহ রাতেই এখানে হাজির হয়। ঐ সময় সন্ধ্যারাত ও কিছুটা ঝড় বৃষ্টি হওয়া এবং হেমায়েতপুর থেকে চুয়াডাঙ্গা শহর অন্ততঃ ২০ কিমি দূরবর্তী হওয়ায় আশিক ও তার ভাই-বোনসহ আর ফিরে আসতে পারে নাই এবং মোবাইল যোগাযোগও বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। অবশেষে পুলিশ সুপার মহোদয়ের সরাসরি তত্ত্বাবধান এবং নির্দেশনায় ওসি সাহেবের নেতৃত্বে চুয়াডাঙ্গা থানা পুলিশের একটি চৌকস টিম এক শ্বাসরুদ্ধকর অভিযানের মধ্য দিয়ে ভোর রাত অনুমান ০৪.০০ ঘটিকার দিকে এই চারজন ভিকটিমকে উদ্ধার করে এই পরিবারের অস্বস্তি এবং হতাশা দূর করেন। পরবর্তীতে ভিকটিমদের তাহার পিতা মাতার নিকট হস্তান্তর করা হয়। এই পরিবার চুয়াডাংগা পুলিশের এই ধরনের কর্মকান্ডে মুগ্ধ হয়ে চুয়াডাংগা জেলা পুলিশের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।