লেখকঃ প্রভাষক আমানত উল্লাহ সাকিব
ইতিহাসের ভয়াবহ এক ভাইরাস করোনা-জাতি হিসেবে আজ আমাদের মুখোশ উন্মোচন করেছে।আমরা যে কতটা দায়িত্বহীন,মানুষের জীবন আমাদের কাছে কতটা মূল্যহীন তা করোনায় আমাদের শিখিয়ে দিয়ে যাচ্ছে।দিন দিন দেশের সার্বিক চিত্র দেখে লজ্জিত হচ্ছি আমরা।দেশের একজন প্রধানমন্ত্রী ১২ বছর সর্বোচ্চ চেষ্টা করেও আমাদের মানসিকতার সামন্য পরিবর্তন করাতে পারছেনা।দিনরাত পরিশ্রম করে আমাদের ভাগ্য পরিবর্তন করার চেষ্টা করলেও বিধাতার দেওয়া এই লোভী জাতির ভাগ্য পরিবর্তনে প্রিয় নেত্রীর পক্ষে অসম্ভব হয়ে যাচ্ছে।আজ বঙ্গবন্ধুর উক্তিটি আমার খুম মনে পড়ছে…
বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন-“সবাই পাইলো তেলের খনি,আমি পায়লাম চোরের খনি”
স্বাধীনতার প্রথমদিকের চোরেরা বংশবিস্তার করে ছড়িয়ে ছিটিয়ে দিয়েছে সমগ্র দেশে।চোরের বংশধর প্রজন্মের পর প্রজন্ম আমাদের মাঝে বিদ্যমান আছে এবং অদুর ভবিষ্যতে বহাল তবিয়তে তারাই ঠিকে থাকবে।
আজ আমার একটা গল্প খুব মনে পড়ছে…
গল্পটি আমার কলেজ বন্ধু সম্রাট আইয়ুব আলীর। সে বর্তমানে কক্সবাজার সরকারি কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের লেকচারার হিসেবে কর্মরত। তার বাড়ি কুতুবদিয়া উপজেলায়। আমরা দুজনেই ইন্টার লাইফে হলে থাকতাম। তার পিতার কুতুবদিয়াতে মাছ ধরার বোট ছিল বিধায় তার জন্য প্রতিমাসে ভালই টাকা পয়সা পাঠাতো। হল জীবনের প্রথম মাসের কথা। তার পিতা সে সময় তার জন্য বিশ হাজার টাকা পাঠিয়েছিল।
ছেলে নতুন কলেজে ভর্তি হয়েছে বই খাতা, কলম, কলেজ ড্রেস,অন্যান নতুন শার্টপ্যান্ট ও হলের নানারকম লজিস্টিক্সের জন্য সেই টাকা তার আব্বা পাঠিয়েছিল। কিন্তু তার বদঅভ্যেস ছিল সারাদিন সিনেমা দেখত ও আজেবাজে খরচ করত। সে তার পিতার পাঠানো টাকায় কিছুই কিনেনি, এমনকি বিচানার বেড চাদর ও কিনেনি। পরের মাসের ১৫ তারিখের দিকে তারা আব্বা ফোন করল।তখন ফোন আসলে হল অফিস থেকে চিৎকার করে ডাকা হত। হঠাৎ শুনতে পেলাম আইয়ুব তোমার আব্বা কুতুবদিয়া থেকে ফোন করছে। তখন আমি ও তার সাথে গেলাম, তার আব্বা ফোনের অপার থেকে জিজ্ঞেস করল গত মাসে পাঠানো ২০ হাজার টাকা পাইছে কিনা এবং বইখাতা,কলম,কাপড় চোপড়, বেডপত্র কিনছে কিনা, আর টাকা লাগবে কিনা। তাতে আইয়ুব যে উত্তর দিল তাতে আমি বেকুব বনে গেলাম। আইয়ুব বলল,আব্বা আমার সব কেনা হয়েছে, আমার আর কিছুর দরকার নেই অথচ তার কিছুই কেনা হয়নি তার সব কিছুর দরকার।
গল্পটা যে জন্য বলা।আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাছিনা করোনা মহামারিতে সকল জেলার খুঁজ খবর রাখছেন প্রতিনিয়ত। সকল জেলার ডিসি সহ অন্যান কর্মকর্তাদের সাথে ঘন্টার পর ঘন্টা ভিডিও কনফারেন্স এর মাধ্যমে জেলার করোনায় সমস্যার কথা এবং প্রস্তুতি সম্পর্কে শুনতেছেন।কথা হয় আমাদের কক্সবাজারের সিভিল সার্জনের সাথে।মাননীয় প্রধানমন্ত্রী করোনার প্রস্তুতি সম্পর্কে উনার কাছে জিজ্ঞেস করার পর উনার যে ভাবে উত্তর ছিল তা আমি নিছে ভিডিও সহ সংযোজন করলাম।
আপনাদের চাটুকারিতা,মিথ্যাচার এবং সরকারের দেওয়া বিভিন্ন সময়ে অর্থ আত্মসাৎ এর আসল তথ্য লোকাতে গিয়ে যে মিথ্যাচার করেছেন তার পরিনাম, কক্সবাজারের পরিচিত মুখ ডালিম ভাই এর মত তরুণ পর্যটন উদ্যোগতা এবং আরো অনেকের মৃত্য।সামনের দিনগুলোতে এই মৃত্যুর মিছিল আরো কত লম্বা হবে তা আল্লাহ ছাড়া কেউ জানেনা।
প্রশাসনিক ক্ষমতার কারনে আপনারা এই যাত্রায় বেঁচে গেলেও শেষ বিচারে পরিত্রাণের সুযোগ হবে না।জাতির এই চরম দুর্যোগে আপনাদের এই মিথ্যাচার আমরা কখনো ক্ষমা করবোনা।
আপনাদের শুভ বুদ্ধির উদয় হোক।
লেখকঃ-
আমানত উল্লাহ সাকিব
প্রভাষক, সমাজবিজ্ঞান বিভাগ
উখিয়া কলেজ।কক্সবাজার।