চট্রগ্রাম প্রতিনিধি:
প্রাণঘাতী কোভিড-১৯ নীরবে সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ছে। এই ভাইরাস প্রতিরোধের প্রচেষ্টায় বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে উপসর্গহীন রোগীরাই। সীতাকুণ্ড উপজেলার মোট করোনা আক্রান্ত রোগীর ৪০ শতাংশের কোন উপসর্গ নেই। সীতাকুণ্ড উপজেলায় এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়েছে ১২৪ জন সুস্থ হয়ে বাসায় ফিরেছেন ৫৩ জন। হোম আইসোলেশন এ থাকা ৪০ জনের মধ্যে সুস্থ হয়েছে ২০ জন। করোনাই আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে ৩ জন। করোনা উপসর্গ নিয়ে মারা গেছে সর্বশেষ এই পুলিশ সদস্য সহ ৮ জন। আজ ঐ পুলিশ সদস্যের করোনা রিপোর্ট পজেটিভ আসে।করোনা আক্রান্ত রোগীর সংস্পর্শে আসা প্রায় ১০০০ মানুষ রয়েছে লগডাউনে। সর্বশেষ ৮ জন করোনা আক্রান্তের মধ্যে রয়েছে সীতাকুণ্ড মডেল থানার ওসি (ইন্টেলিজেন্ট) এবং অন্য এক পুলিশ সদস্য। এর আগে কুমিরা হাইওয়ে থানার তিন পুলিশ সদস্য করোনাই আক্রান্ত হয়েছে।
গতকাল শনিবার দিনের বিভিন্ন সময়ে উপজেলায় করোনা উপসর্গ নিয়ে চার ব্যাক্তি মারা যান।
মারা যাওয়া অন্যরা হলেন, সলিমপুর ইউনিয়নের পাক্কার মাথা এলাকার বাসিন্দা শাহ আলম(৫৫), বাড়বকুণ্ড ইউনিয়নের হাশেমনগরের বাসিন্দা পঙ্কজ দাশ(৫০) ও মুরাদপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা শম্ভু নাথ(৫০ তাদের মারা যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের(ইউপি) চেয়ারম্যানবৃন্দ। সীতাকুণ্ড মডেল থানার উপ পরিদর্শক মোঃ একরামুল ইসলাম।
কয়েক দিন আগে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক পরিচালক বলেন, উপসর্গহীন রোগীর কারণে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবে এবং তাদের আইসোলেশনে পঠানোই এখন সরকারের প্রধান চ্যালেঞ্জ।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মিল্টন রায় জানান, সীতাকুণ্ড উপজেলাটি করোনা সংক্রামণের উচ্চ ঝুঁকির উপজেলার তালিকায় থাকলেও জনগণের মধ্যে কোন জনসচেতনতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। বর্তমানে উপজেলার প্রতিটি দোকানপাট সকাল ৮ টা থেকে বিকাল ৪ টা পর্যন্ত খোলা রাখার নির্দেশনা দিয়েছি। নতুন করে সরকারি কোন নির্দেশনা পাওয়া গেলে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানিয়েছেন এই কর্মকর্তা।
সীতাকুণ্ড উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ নুর উদ্দিন রাশেদ জানান, বাড়িতে থাকা, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা, মাস্ক এবং হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহারসহ বিভিন্ন স্বাস্থবিধি নেমে চলাই এ সমস্যাটি কাটিয়ে ওঠার প্রধান উপায়। তবে সীতাকুণ্ডবাসী তা করতে ব্যর্থ হচ্ছে এবং একটি গুরুতর পরিণতিকে আমন্ত্রণ জানাচ্ছে। সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টা ছাড়া প্রাণঘাতী কোভিড-১৯ মোকাবিলা করা সম্ভব নয়।
সীতাকুণ্ডের নাগরিক সমাজ মনে করছে, সরকার এখন জীবিকার স্বার্থে অর্থনৈতিক কার্যক্রম পুনরায় চালু করেছে। আমরা যদি মাস্ক ব্যবহার করি, যথাসম্ভব সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখি, সাবান দিয়ে হাত ধুই এবং জনসমাবেশ এড়াতে পারি, তাহলে আমরা ভাইরাস থেকে নিজেদের কিছুটা রক্ষা করতে সক্ষম হব,এমন পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) দিকনির্দেশনা যেমন- মাস্ক, গ্লাভস ও স্যানিটাইজার ব্যবহার করা, নিরাপদে থাকার জন্য ঘন ঘন হাত ধোয়া ইত্যাদি স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করার পরামর্শ দিয়েছেন তারা।