আব্দুল করিম চট্টগ্রাম মহানগর প্রতিনিধি
মুখে মুখে মাস্ক, হাতে গ্ল্যাভসছোট-বড়, তরুণ-তরুণী থেকে শুরু করে বয়োবৃদ্ধ সকলের মুখে নানা রঙয়ের মাস্ক। একটা সময় ছিল যখন এমন দৃশ্য হাতেগুনা কয়েক জনের মধ্যে দেখা যেত।বর্তমান পরিবেশ একেবারেই ভিন্ন। এ যেন এক অন্য শহর। এক মহামারী বদলে দিয়েছে সব কিছু। চিরচেনা মানুষগুলোও এখন আর দেখলেই সহজে চেনার উপায় নেই। কারণ সকলের নাক, মুখ একটি কাপড়ে ঢাকা। সবার মধ্যেই বেড়েছে সচেতনতাবোধ। তাই সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়া বৈশ্বিক মহামারী করোনাভাইরাস আতঙ্কে নগরীতে বেড়েছে মুখে মাস্ক, হাতে গ্ল্যাভস ও চোখে চশমা ব্যবহারের প্রবণতা। এরই মধ্যে বাংলাদেশে এ মহামারীতে আক্রান্ত হয়েছে ৬৮ হাজার ৫শ’ চার জন। এতে আক্রান্ত হয়ে প্রতিদিনই বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যা। বিশেষজ্ঞদের মতে মুখে মাস্ক ব্যবহারই এ ভাইরাস থেকে রক্ষা দিতে পারে শতকরা ৯০ থেকে ৯৫ ভাগ।বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু) বলছে, সারাবিশ্বে নৈরাজ্য সৃষ্টিকারী প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে মাস্ক ব্যবহার খুব জরুরি। ভাইরাসটি সংক্রমণের তিন মাস পর সংস্থা এ পরামর্শ দেয়। মহামারী শুরুর প্রথম দিকে সংক্রমণ ঠেকাতে মাস্ক ব্যবহারে গুরুত্ব না দিলেও পরবর্তীতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা অবস্থান পাল্টে পরামর্শ দিয়েছে পাবলিক প্লেসে সবাইকে মাস্ক ব্যবহারের। নতুন গবেষণায় প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে সংস্থাটি জানিয়েছে, করোনাভাইরাসে সংক্রমিত ব্যক্তি থেকে অন্যের শরীরে তা ছড়ানোর ক্ষেত্রে বাধা হিসেবে কাজ করে মাস্ক। এ ভাইরাসটি ছড়ায় আক্রান্ত ব্যক্তির হাঁচি, কাশি, সংস্পর্শ থেকে। তাই নগরীতে এর মধ্যে বেড়েছে মুখে মাস্ক ও হাতে গ্ল্যাভস ব্যবহারের প্রবণতা। মাস্ক ব্যবহার করছে ছোট বড় সকলেই। এভাবে চলতে থাকলে শীঘ্রই এ মহামারী থেকে রক্ষা পাওয়ার আশা করছেন বিশেষজ্ঞরা। শুধু সচেতন জনগণ নয়, মাস্ক ব্যবহারে অভ্যস্থ হয়ে উঠছে বাজারের সবজি বিক্রেতা থেকে শুরু করে ভাসমান হকার, রিকশাচালক, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন কর্মীরাও। এক কথায় বাদ পড়েনি কেউ।এছাড়া এ ভাইরাস চলমান পরিস্থিতিতে কড়াকড়ি স্বাস্থ্যবিধি ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ সরকার। নয়া নির্দেশিকায় স্পষ্ট বলা হয়েছে, মাস্ক না পরে বা অন্যান্য স্বাস্থ্যবিধি না মেনে বাইরে চলাচল করলে সর্বোচ্চ ছয় মাসের কারাদন্ড বা এক লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানা করা যাবে। মূলত স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পাশাপাশি নির্দেশ যেন সকলেই পালন করেন তার জন্যই কঠোর শাস্তির কথা ঘোষণা করেছে সরকার।
নগরীর দুই নম্বর গেট এলাকার বাসিন্দা পলাশ ও আলতাফ হোসেন বলেন, শহরে এখন ভাইরাসের প্রবণতা অনেক বেশি। কে ভালো আর কে অসুস্থ তা বুঝার উপায় নেই। এছাড়া প্রতিদিনই কাজে যেতে হচ্ছে। তাই নিজেই নিজেকে নিরাপদ রাখতে হবে। এখন আল্লাহ যতক্ষণ বাঁচায় ততক্ষণই বাঁচবো। কিন্তু নিজেরাও সচেতন হতে হবে। এ জন্য সর্বদা মুখে মাস্ক, হাতে গ্ল্যাভস ও চোখে চশমা ব্যবহার করছি।